বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ছোট যমুনা নদীর বাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন এ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রশাসনের গাফিলতিতে বাঁধটি প্রায় তিন বছর ধরে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মেরামত করতে ভাঙ্গা অংশের ৫০ গজ দূর থেকে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। ফলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আজ রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট যমুনার মথুরাপুর ইউপির কদমগাছী অংশের বাঁধে ফাটল ধরেছে। অনেকটা অংশ ধ্বসে গেছে। গত বছর বর্ষা মৌসুমে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। এবার আবার নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গা অংশের ৫০ গজ দূরে ড্রেজিং বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। এখন সেই বালু বস্তায় ভরা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সহযোগিতায় এসব কাজ তদারকি করছেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ার্ক এসিস্টেন্ট নূর ইসলাম।
ড্রেজিং দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, ভাঙ্গা অংশের অনেক দূর থেকে বালু তুলেছি। বাঁধের ভাঙ্গা অংশের উপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
জানা যায়, গত বছর এখানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় মেরামতের জন্য। এছাড়াও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় গত বছর বাঁধটির ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হয়।
স্থানীয় মোশারফ হোসেন, উজ্জল হোসেন, রশিদা বেগম ও দয়াল জানান, আশির দশকে এখানে দুইবার ভেঙ্গে বন্যা হয়েছিল। তারপর আর ভাঙ্গেনি। কিন্তু তিন বছর থেকে এখানে আবার ভাঙ্গার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত বাধটি সংস্কারের দাবি জানান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু বলেন, ‘বাঁধটি মেরামতের জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। তারা কাজ করতে দেরি করছে। ভাঙ্গা অংশের পাশেই বালু উত্তোলন বিষয়ে তিনি বলেন, বালু উত্তোলন করতে আমি মেম্বারকে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু সে সরকারি দলের লোক। তাই আমার কথা শোনেনি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জোয়ার্দার মো. আসাদুল্লাহ বলেন, আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার একটি বাজেট পাঠানো হয়েছে। পাশ হলেই এখানে স্থায়ী সমাধানের কাজ শুরু হবে। আজ (রোববার) ভাঙ্গা বাঁধ পরিদর্শন করেন রাজশাহী পৌর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড একটা বাজেট পাঠিয়েছে। প্রকল্প আকারে পাশ হয়ে আসতে দুই থেকে আড়াই বছর সময় লাগবে। ততদিন যাতে এখানে কোনো সমস্যা না হয় সেরকম একটা ব্যবস্থা আপাতত করা হচ্ছে।
ভাঙ্গা অংশের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বিষয়ে তিনি বলেন, যদি ভাঙ্গা অংশের দিক থেকে বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে বাঁধের ক্ষতি হবে। বালু কোথা থেকে উত্তোলন করেছে সেটা তো আমি দেখিনি। যদি নদী থেকে উত্তোলন করা হয় সে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবেন।
ভাঙ্গা বাঁধ এবং ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। আমি বিষয়টি দেখছি।
Leave a Reply